আমেরিকান ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড ইনস্টিটিউটের (ANSI) মতে অপারেটিং সিস্টেমের সংঙ্গা হল:
“Software which controls the execution of computer programs and which may provide scheduling, debugging, input/output control, accounting, compilation, storage assignment, data management and related service”অর্থাৎ “যে সফটওয়্যার কম্পিউটার প্রোগ্রামের এক্সিকিউশন নিয়ন্ত্রন করে এবং সিডিউলিং, ডিবাগিং, ইনপুট/আউটপুট নিয়ন্ত্রণ, একাউন্টিং, কম্পাইলেশন, তথ্যাবলি সংরক্ষণ, কার্যক্রম, তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ সমুহ করে থাকে তাকে অপারেটিং সিস্টেম বলে।”
অপারেটিং সিস্টেমও মূলত একটি সফ্টওয়্যার। তবে এটি একটি স্পেশাল সফ্টওয়্যার যা ঐ ডিভাইস/কম্পিউটারে থাকা অন্যান্য সফ্টওয়্যারগুলিকে এক্সিকিউট করে থাকে। এটি একটি কম্পিউটার এর অন্যান্য সকল কর্যপ্রনালি সম্পাদন করা জন্য একটি বিশেষ পোগ্রাম। অপারেটিং সিস্টেম ছাড়া, একটি কম্পিউটার শুধুমাত্র একটি বক্স ছাড়া আর কিছুই না।
বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম
অপারেটিং সিস্টেম এর কথা বললে অনেকে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম এর কথা মনে করে। অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন হতে পারে। জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম এবং কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। এছাড়াও আরো অনেক অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে।কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের উদাহরণ
- Microsoft Windows – পারসোনাল কম্পিউটার এবং IBM কম্পিউটার এর জন্য উপযুক্ত একটি অপারেটিং সিস্টেম। Microsoft Windows সবচেয়ে সাধারণ এবং সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত একটি অপারেটিং সিস্টেম।
- Apple MAC OS – অ্যাপল ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম। এটি শুধুমাত্র অ্যাপল কম্পিউটার জন্যই ব্যবহৃত একটি অপারেটিং সিস্টেম ।
- Ubuntu Linux – এটিও পারসোনাল কম্পিউটার এবং IBM কম্পিউটার এর জন্য উপযুক্ত একটি অপারেটিং সিস্টেম । এটি ওপেন সোর্স এবং একটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম।
- Google Android – Google Android অপারেটিং সিস্টেমটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং ট্যাবলেট এর জন্য ব্যবহৃত হয়।
- iOS – শুধুমত্র অ্যাপল আইফোন এবং আইপ্যাড এ ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম।
- Chromium – এটি গুগলের একটি অপারেটিং সিস্টেম।
অপারেটিং সিস্টেম এর প্রকারভেদ
- ব্যাচ অপারেটিং সিস্টেম
- সময়-শেয়ারিং অপারেটিং সিস্টেম
- ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেম
- নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম
- রিয়েল টাইম অপারেটিং সিস্টেম
ব্যাচ অপারেটিং সিস্টেম
ব্যাচ মোড অপারেটিং সিস্টেমে দীর্ঘক্ষণ ধরে ডাটা সংগ্রহ করে এবং পরে সকল ডাটাকে নিয়ে একসাথে প্রসেসিং প্রক্রিয়া শুরু করে। এই সিস্টেমে একটি কাজ শেষ হলে পরবর্তী কাজ প্রসেসিং করতে শুরু করে। MS-DOS ব্যাচ মোড পদ্ধতির অপারেটিং সিস্টেম। এই পদ্ধতিকে সিরিয়াল, সিকুয়েনশিয়াল বা অফ-লাইন মোড অপারেটিং সিস্টেমও বলা হয়। প্রথমে ইউজারের দ্বারা সাবমিট করা কাজগুলি কম্পিউটারের মধ্যে একটি ব্যাচে সংগৃহীত হয় এবং একটি ইনপুট সারিতে রাখা হয়। যখন কম্পিউটার প্রতিটি কাজ একটির পর একটি সম্পাদন বা প্রক্রিয়া করতে থাকে তখন ইউজারদের কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয় না।টাইম-শেয়ারিং অপারেটিং সিস্টেম
এই ধরণের অপারেটিং সিস্টেমে বিভিন্ন ইউজারকে CPU এর মোট ব্যবহারযোগ্য সময়, ব্যবস্থপনা মেমরি এবং কম্পিউটার সিস্টেম এর অন্যান্য উপকরণগুলি শেয়ার করে। মাল্টিপ্রোগ্রামিং এর কাজ একই CPU দিয়ে সমাধান করা যায় টাইম শেয়ারিং অপারেটিং সিস্টেমে। এই সিস্টেমে একই CPU এর মাধ্যমে একাধিক প্রোগ্রাম চালানো যায়। একাধিক ব্যবহারকারী এই সিস্টেমে কাজ করতে পারে। টাইম শেয়ারিং এর মাধ্যমে একসথে অনেক ইউজার কাজ করতে পারে।ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেম
এই সিস্টেমে একত্রিতভাবে যুক্ত বিভিন্ন কম্পিউপারগুলি নিজেদের মধ্যে কাজ ভাগ করে নিয়ে প্রদত্ত কাজটি সম্পাদন বা প্রক্রিয়াকরন করে থাকে। একটি অপারেটিং সিস্টেম যা ডিস্ট্রিবিউটেড প্রসেসিংকে সাপোর্ট করে তার প্রধান বৈশিষ্ট হল যোগদানাকারী কম্পিউটারগুলির মধে অপারেশনগুলির সংযোগ রক্ষা ও তথ্যের প্রবাহমানতা বজায় রাখা।একটি ডিস্ট্রিবিউটেড অপারেটিং সিস্টেম নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম এর মত হতে পারে। যদি একটি নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম, বিভিন্ন সংযুক্ত কম্পিউটারগুলির উপস্থিতি সম্পের্কে ব্যবহারকারী সজাগ থাকে, যেগুলিতে ব্যবহারকারী লগ ইন করতে পারে এবং তথ্য সরবরাহ করতে পারে। যদিও একটি ডিস্টিবিউটেড সিস্টেমে ইউজার ডিস্ট্রিবিউটেড ভাবে কাজের প্রক্রিয়াকরণের ব্যাপারে কিছুই জানতে পারে না। ইউজারের কাছে এটি এমনভাবে ফুটে ওঠে যাতে করে মনে হয় প্রক্রিয়ারণটি একটিমাত্র প্রসেসর সিস্টেমে সম্পাদন হচ্ছে।
নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম
একটি নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম এমন একটি অপারেটিং সিস্টেম যা নেটওয়ার্কগুলিতে একাধিক কম্পিউটারগুলির মধ্যে ওয়ার্কস্টেশন, ডেটাবেস শেয়ার, অ্যাপ্লিকেশন শেয়ার এবং শেয়ার ফাইল এবং প্রিন্টার শেয়ার অ্যাক্সেস ভাগ করে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়। বেশিরভাগ সুপরিচিত নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেমগুলির মধ্যে রয়েছে মাইক্রোসফ্ট উইন্ডোজ সার্ভার 2003, মাইক্রোসফ্ট উইন্ডোজ সার্ভার 2008, 2012, লিনাক্স এবং ম্যাক ওএস এক্স।নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে একজন ইউজার নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হার্ডওয়্যার এবং সফওয়্যার (প্রিন্টার, স্কানার, স্টোরেজ ডিভাইস, বিভিন্ন সফটওয়্যার) শেয়ার করে ইউজ করতে পারে। তবে এর জন্য নেটওয়ার্ক অপারেটিং সিস্টেম সহ সকল ইউজারদেরকে একটি নেটওয়ার্কে থাকতে হবে।
রিয়েল টাইম অপারেটিং সিস্টেম
একটি রিয়েল-টাইম অপারেটিং সিস্টেম (RTOS) একটি অপারেটিং সিস্টেম যা একটি নির্দিষ্ট সময় সীমাবদ্ধতার মধ্যে একটি নির্দিষ্ট কাজ করার নিশ্চয়তা দেয়। সাধারণত এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম সাধারণত যেখানে ডটিা প্রসেসিং এর জন্য রেসপন্স টাইম জটিল সেখানে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ সরুপ এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট দেখাশোন, কৃত্রিম উপগ্রহের যাতায়াত নিয়ন্ত্রন, রিয়েল টাইম সিমুলেটরস ইত্যাদি। এই ধরনেট অপারেটিং সিস্টেম এর রেন্সপন্স টাইম খুব বেশি হয়। এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম হল LYNX, RTX ইত্যাদি।মাল্টিপ্রোগ্রামিং অপারেটিং সিস্টেম
মাল্টিপ্রোগ্রামিং অপারেটিং সিস্টেম এর মাধ্যমে একাধিক প্রোগ্রাম প্রায় একই সাথে একটি মাত্র সিপইউ এর মাধ্যমে এক্সিকিউট হয়ে থাকে। এই ধরনের অপারেটিং সিস্টেম একই প্রইমারি মেমরিতে একই সাথে একাধিক প্রোগ্রামকে রান করতে পারে। এটি করার জন্য অপারেটিং সিস্টেমকে মেমরির সুষ্ঠ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হয়।মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেম
মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেমে একাধিক প্রসেসর এক সাথে চালানো যায়। মাল্টিপ্রসেসিং অপারেটিং সিস্টেমে একসাথে অনেকগুলো প্রসেসর চালানোকে মাল্টিপ্রসেসিং বলা হয়। এই পদ্ধতিতে একটি বড় ও একটি ছোট প্রসেসর থাকে। বড় প্রসেসরকে প্রধান প্রসেসর বা সিপিউ এবং ছোট প্রসেসরকে ফ্রন্ট এন্ড প্রসেসর বা সাপোর্ট প্রসেসর বলা হয়। এই সিস্টেমের মাধ্যমে কাজের গতিবাড়ানো যায়।
No comments:
Post a Comment